রবিবার, ২ মার্চ, ২০২৫

The Gift of the Magi (দ্য গিফট অফ দ্য ম্যাজাই) - O Henry (ও হেনরি)

ভূমিকা

ও'হেনরি ছদ্মনামে পরিচিত উইলিয়াম সিডনি পোর্টার এর লেখা "দ্য গিফট অফ দ্য ম্যাজাই" গল্পটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত হয়। এই ছোট গল্পটি ভালোবাসা, ত্যাগ এবং অপ্রত্যাশিত উপহারের গভীরতা নিয়ে আলোচনা করে। এটি একটি সাধারণ দম্পতির গল্প যারা ক্রিসমাসের জন্য একে অপরকে উপহার দেওয়ার জন্য তাদের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস বিক্রি করে দেয়। গল্পটি আমাদের শেখায় যে সত্যিকারের উপহারের মূল্য বস্তুর মধ্যে নয়, বরং ভালোবাসার গভীরতায় নিহিত।

চরিত্র

  • ডেলা ডিলিংহাম ইয়াং- একজন তরুণী স্ত্রী, যে তার স্বামীর জন্য ক্রিসমাসের উপহার কেনার জন্য তার সুন্দর লম্বা চুল বিক্রি করে দেয়।
  • জিম ডিলিংহাম ইয়াং- ডেলার স্বামী, একজন তরুণ, যে তার স্ত্রীর জন্য ক্রিসমাসের উপহার কেনার জন্য তার মূল্যবান ঘড়ি বিক্রি করে দেয়।

সারাংশ

ডেলা এবং জিম, একজন দরিদ্র দম্পতি, ক্রিসমাসের জন্য একে অপরকে উপহার দেওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে। ডেলার কাছে তার লম্বা, সুন্দর চুল এবং জিমের কাছে তার সোনার ঘড়ি, এই দুটি জিনিসই তাদের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান। ডেলা তার স্বামীর জন্য একটি ঘড়ির চেন কেনার জন্য তার চুল বিক্রি করে দেয়। অন্যদিকে, জিম ডেলার জন্য চুলের চিরুনি কেনার জন্য তার ঘড়ি বিক্রি করে দেয়। যখন তারা একে অপরের উপহার দেখে, তারা বুঝতে পারে যে তারা একে অপরের জন্য তাদের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস ত্যাগ করেছে। কিন্তু, তাদের ভালোবাসার গভীরতা এবং একে অপরের প্রতি তাদের ত্যাগ, তাদের উপহারগুলোকে আরও মূল্যবান করে তোলে। গল্পটি শেষ হয় এই উপলব্ধির মাধ্যমে যে, ভালোবাসার কাছে সব বস্তুর মূল্য তুচ্ছ। তারা একে অপরের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা জানিয়ে ম্যাজাইদের মতোই উপহার দেয়।

থিম এবং বিশ্লেষণ

"দ্য গিফট অফ দ্য ম্যাজাই" গল্পটি মূলত নিঃস্বার্থ ভালোবাসা এবং ত্যাগের গুরুত্ব তুলে ধরে। ও'হেনরি এই গল্পে দেখিয়েছেন যে সত্যিকারের উপহারের মূল্য বস্তুর মধ্যে নয়, বরং ভালোবাসার গভীরতায় নিহিত।

  • ভালোবাসা এবং ত্যাগ: গল্পটির মূল বিষয় ভালোবাসা এবং ত্যাগ। ডেলা এবং জিমের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা এবং একে অপরের জন্য ত্যাগ, গল্পটিকে একটি গভীর আবেগপূর্ণ রূপ দেয়। তারা তাদের সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস বিক্রি করে দেয়, শুধুমাত্র একে অপরের উপহার কেনার জন্য।
  • বিদ্রূপাত্মক পরিণতি: গল্পটির শেষ পরিণতিতে একটি বিদ্রূপাত্মক মোড় রয়েছে। তারা একে অপরের জন্য যে উপহার কিনেছিল, তা এখন তাদের কাছে অপ্রয়োজনীয় হয়ে গেছে। এই বিদ্রূপাত্মক পরিণতি গল্পটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে এবং আমাদের ভালোবাসার গভীরতা নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।
  • প্রতীকবাদ: ডেলার চুল এবং জিমের ঘড়ি তাদের মূল্যবান সম্পদ এবং আত্মত্যাগের প্রতীক। এই দুটি জিনিস বিক্রি করার মাধ্যমে তারা একে অপরের প্রতি তাদের ভালোবাসার গভীরতা প্রকাশ করে।
  • সরল ভাষা এবং আবেগ: ও'হেনরি সরল ভাষা ব্যবহার করে গল্পটিকে আবেগপূর্ণ করে তুলেছেন। তিনি সাধারণ মানুষের জীবনের গল্প বলেন, যা পাঠকের হৃদয়ে সরাসরি স্পর্শ করে।
  • ম্যাজাইদের তুলনা: গল্পের শিরোনামে "ম্যাজাই" শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা বাইবেলের সেই জ্ঞানী ব্যক্তিদের বোঝায়, যারা যীশুর জন্মদিনে উপহার নিয়ে এসেছিলেন। ডেলা এবং জিমকেও ম্যাজাইদের মতো জ্ঞানী বলা হয়েছে, কারণ তারা একে অপরের প্রতি সত্যিকারের ভালোবাসা এবং ত্যাগ দেখিয়েছেন।

"দ্য গিফট অফ দ্য ম্যাজাই" একটি ছোট্ট গল্প হলেও, এর গভীর বার্তা আজও প্রাসঙ্গিক। এটি আমাদের শেখায় যে সত্যিকারের ভালোবাসা এবং ত্যাগ যেকোনো মূল্যবান বস্তুর চেয়েও অনেক বেশি মূল্যবান।

বাহ্যিক লিঙ্কগুলি

বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

The Romance of a Busy Broker (দি রোমান্স অফ এ বিজি ব্রোকার) - O Henry (ও হেনরি)

ভূমিকা

"দি রোমান্স অফ এ বিজি ব্রোকার" মার্কিন লেখক ও. হেনরি দ্বারা রচিত একটি ছোট গল্প, যা ১৯০৬ সালে প্রকাশিত হয়। এই উদ্দিষ্ট গল্পটি ও. হেনরির স্বাক্ষর শৈলীর (সিগ্নেচার স্টাইল) একটি উৎকৃষ্ট নমুনা। গল্পটির পটভূমিতে আছে, নিউ ইয়র্ক শহরের দ্রুত ব্যস্তবহুল পরিবেশের একটি ব্রোকারেজ অফিস। গল্পের মূল চরিত্র হলেন একটি কর্ম বিলাসী স্টকব্রোকার, হার্ভি ম্যাক্সওয়েল, তার নিত্য দৈনন্দিন জীবনের দায়িত্ব পালন করতে এতই মগ্ন থাকেন, যে তার আশেপাশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো না তার মনে, না তার স্মৃতিতে দাগ কাটে, তার যতই তার পরম আত্মীয়ার প্রেম হোক না কেন।

চরিত্র

  • হ্যারি ম্যাক্সওয়েল
  • মিস লেসল
  • মি: পিচার

সারাংশ

নিউ ইয়র্ক শহরে তাঁর ব্রোকারেজ অফিসে, তাঁর রুটিন মাফিক দিনের শুরু করেছেন হার্ভি ম্যাক্সওয়েল, এই শহরের একজন অতি সফল ও অত্যন্ত ব্যস্ত স্টকব্রোকার। তাঁর দিন ভরা থাকে উদ্দামভাবে চিঠিগুলির উত্তর দেওয়ায়, ক্লাইন্টদের সাথে কথা বলায়, আর তাঁর অধীনস্ত কর্মীদের আদেশ দেওয়ায়; এবং এইসমস্ত কিছুই করতে হয় দস্তাবেজের এই ঘূর্ণিঝড় সামলাতে সামলাতে। তাঁর দক্ষ সচিব, মিস লেসলি, তাকে সাহায্য আর এই অফিসের যাবতীয় দরকার মেটান নির্বিবাদে।

দিন অতিবাহিত হবার সাথে সাথে, ম্যাক্সওয়েলের মন সম্পূর্ণভাবে গ্রাস হয়ে যায় কাজে, যে তাঁর আশেপাশে কি চলছে তা নিয়ে তিনি একেবারে উদাসীন। লেসলি অন্য দিকে কিছু একটা নিয়ে খুব খুঁতখুঁত করছিল, কয়েকবার ম্যাক্সওয়েলের ডেস্কের কাছে এমনি এমনি ঘুরে গেছে। তাই একটা সময় সে দপ্তরের কেরানি, মি: পিচারকে জিজ্ঞাসা করে বসল, যে তাকে ম্যাক্সওয়েল নতুন স্টেনোগ্রাফার বা তার বদলির জন্য কোন খোঁজ খবর নিতে বলেছেন কিনা। উত্তরে পিচার জানালেন, হ্যাঁ, তিনি এজেন্সিতে জানিয়েছিলেন, কিন্তু তখনও কেউ আসেনি চাকরির খোঁজে। লেসলি তার কাজ চালিয়ে যায়, অনিশ্চয়তার সত্ত্বেও।

দিনের ব্যস্ততার মধ্যে ম্যাক্সওয়েল নিমজ্জিত থাকেন অসংখ্য স্টক লেনদেনের হিসাব ও তার পাশাপাশি ফোন কল সামলাতে সামলাতে। এসবের মধ্যে এজেন্সি থেকে বদলি এসে পড়ে। ম্যাক্সওয়েল কাজে এতটাই মশগুল ছিলেন যে, তিনি অস্বীকার করেন যে তিনি কোন নতুন স্টেনোগ্রাফারের জন্য খবর দিয়েছিলেন, আর লেসলীর কাজের প্রশংসা করতে করতে বলেন যে লেসলি থাকতে তাঁর নতুন কাউকে দরকার নেই।

অতপর ম্যাক্সওয়েল কিছুক্ষণের জন্য লাইলেক ফুলের সুবাসে অন্যমনস্ক হয়ে পড়েন, যা তাকে মিস লেসলির কথা মনে করিয়ে দেয়। তার ভাবনায় বিভোর হয়ে গিয়ে, ম্যাক্সওয়েল তাঁর কাছে গিয়ে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেন, প্রস্তাবের অকস্মিকতাকে মানতে মানতে। এই ঘটনার প্রাসঙ্গিকতায় লেসলির চোখে জল চলে আসে, আর সে জানায় গতকাল সন্ধ্যে তাদের বিয়ে হয়ে গেছে ইতিমধ্যে, যে তথ্যটা ম্যাক্সওয়েল কাজের চাপে বেমালুম ভুলে বসেছেন।

থিম এবং বিশ্লেষণ

'দি রোমান্স অফ এ বিজি ব্রোকার' গল্পটির মাধ্যমে ও. হেনরির কাজ আর ব্যক্তিগত জীবনের বিবাদকে মুন্সিয়ানার সাথে তুলে ধরেছেন। পেশাগত সাফল্যের জন্য সম্পর্ককে অবহেলা করা, কতটা যে অর্থহীন সেটাই তিনি কৌতুক ও পরিহাস দ্বারা আলোকিত করেছেন। হার্ভি ম্যাক্সওয়েল হলেন সেই সমস্ত পুরুষদের প্রতিরূপ যারা তাদের পেশার তাগিদে বাস্তব থেকে বিছিন্ন থাকে। এই কর্ম কেন্দ্রিক ব্যবহার তাকে তাঁর নিজের বিবাহ, তাঁর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলককেও ভুলিয়ে দেয়।

মিস লেসলি, তাঁর সচিব এবং তাঁর নববধূ, সেই ধৈর্য ও ভালোবাসার প্রতীক যা তাঁকে নীরবে সমর্থন করে যায় বিনা আশায়। তার ভদ্র মনে করানো আর ঘটনাক্রমিক তাদের বিবাহের আত্মপ্রকাশ এই গল্পের প্রধান বিদ্রুপ সমাজের প্রতি। ম্যাক্সওয়েল কর্মক্ষেত্রে এত সবল আর বুদ্ধিমান হয়েও নিজের ব্যক্তিগত ব্যাপারগুলোকে সামলাতে একেবারেই অক্ষম। তাঁর অন্যমনস্কতা হাস্যরসের সঞ্চার করার সাথে, কাজের প্রতি অতিশয় ভক্তি নিয়ে একটি সূক্ষ্ণ সমালোচনা করে।

সবশেষে, ও. হেনরি পেশাগত সাফল্য আর ব্যক্তিগত বিস্মৃতির মধ্যে একটি পরিহাসপুর্ন উত্তেজনাময় পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। চমকপ্রদ সমাপ্তি, ও. হেনরির গল্পের হলমার্ক, এটাই চিহ্নিত করে যে আমরা যদি নিজের দৈনন্দিন জীবনের কাজ আর পেশাগত দায়িত্বে বিভোর হয়ে যাই, তাহলে জীবনের অনেক গুরুতপূর্ণ মুহূর্তগুলো দৃষ্টির অগোচরে রয়ে যাবে।

বাহ্যিক লিঙ্কগুলি

শুক্রবার, ২৪ মে, ২০২৪

The Cactus (সেই ক্যাকটাস) - O Henry (ও হেনরি)

ভূমিকা

ও হেনরি লিখিত 'দি ক্যাকটাস' ছোট গল্পটি তা‍ঁর ১৯১৭ সালে প্রকাশিত 'ওয়েফস এন্ড ষ্ট্রেস' গল্পগুচ্ছের অন্তর্গত। গল্পটি তা‍ঁর বুদ্ধিদীপ্তি, শব্দক্রীড়া এবং বাঁকা সমাপ্তির জন্য পরিচিত।

চরিত্র

  • ত্রিশডেল
  • তার বন্ধু

সারাংশ

"দি ক্যাকটাস" গল্পটি হল ত্রিশডেল নামে একটা লোকের উপর যে তার সম্পর্কের ব্যর্থতার কারণ অনুধাবন করার চেষ্টা করছে, যখন তার ভালোবাসার মহিলাটির বিবাহ অনুষ্ঠানের মধ্যে সে অতিথি রূপে উপস্থিত হয়েছে। গল্পের জট আসতে আসতে খুলতে থাকলে আমরা বুঝতে পারি যে ত্রিশডেলের গর্ব ও আত্মাভিমান একটি ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করে যা তার সম্পর্কের ইতি টেনে দেয়।

গল্পের শুরুতে ত্রিশডেল দুঃখ ও অনুতাপে দগ্ধ হতে থাকে যখন সে দেখে তার প্রাক্তন প্রেমিকা অন্য একটি পুরুষের হাত ধরে বিবাহ মধ্য দিয়ে চিরকালের জন্য তার কাছে পর হয়ে যায়। সে মনে করার চেষ্টা করে কোথায় তার ভুল হয়েছিল, যে তার প্রিয়তমা তাকে এত বড় শাস্তি দিল। তাদের কোন কথা কথিত বিচ্ছেদ হয়নি না হয়েছিল কোন ঝগড়া। পুরানো স্মৃতির মন্থন করতে করতে, তার মনে পড়ে এরকম একটি কথাবার্তার মাঝে সে জিজ্ঞাসা করেছিল যে সে শুনছে ত্রিশডেল নাকি স্প্যানীশ বলতে পারে। কথাটা আসলে অর্ধসত্য, সে খান কতেক প্রবাদ জানত কিন্তু সে শিকার করে যে সে জানে স্প্যানীশ। তাদের মধ্যে একটা ভালো লাগা গড়ে উঠছিল, কিন্তু তাকে সেই মুহূর্তে কোন উত্তর না দিয়ে, পরের দিনের অপেক্ষা করতে বলে।

পরের দিন তার বর্তমান স্বামীর হাত দিয়ে একটা অদ্ভুত দেখতে ক্যাকটাস লাল মাটির টবে করে পাঠায়। যার গায়ে বিদেশী ভাষায় একটা নোট লেখা ছিল, বোধহয় গাছটির নাম। এই উপহার ছাড়া কোন উত্তর আসে না, আসতে আসতে তার প্রেমিকার ব্যাবহারের মধ্যে একটা আন্তরিকতার অভাব বেড়ে উঠে। আর কোন বিচ্ছেদ ছাড়াই চীর বিদায় দিয়ে আজ চিরকালের মত দূরে চলে গেল। এই সব যখন ভাবছে, তখন তার প্রেমিকার দাদা যে ত্রিশডেলের বন্ধুও বটে অন্য ঘর থেকে জিজ্ঞাসা করে, সে কেন এত মন মরা যেন তারই বিয়ে হয়ে গেল। সে তার একমাত্র ছোট্ট বোনকে বিদাই করে এত দুখী নয় বরং নিশ্চিন্ত। এইরকম টুকিটাকি খুনসুটির মাঝখানে সেই ক্যাকটাসটা দেখতে দেখতে জিজ্ঞাসা করে যে, সে এটা কোথায় পেল। যেটার উত্তরে সে জানলে যে ওটা একটা উপহার ছিল, গাছটার ব্যাপারে আরও জানতে চায়। তার বন্ধু ল্যাটিন আমেরিকায় কর্মসুত্রে থাকার দরুন, সেই গাছটাকেও চিনতে পারে এবং ট্যাগটা পড়ে গাছটার স্প্যানীশ নামটা বলে ভেনিটোমামে যার বাংলা করলে দাড়ায় - ‘এসো আমায় নিয়ে যাও’।

থিম এবং বিশ্লেষণ

এই গল্পের তিনটি মূল থিমগুলি হল:

  • গর্ব ও আত্মাভিমান - ত্রিশডেলের সমানে নিজেকে মহান ও জ্ঞানী করার ভান তার স্বপ্নভঙ্গ করল।
  • ভুল বোঝাবুঝি - এই গল্পের মূল বোঝাবুঝি আলোকপাত করে যে সততাপূর্ণ সংযোগের অভাবে কতটা বিধ্বংসী পরিণতি হতে পারে।
  • অনুশোচনা ও প্রতিফলন - গল্পটির ত্রিশডেলের আত্মদর্শন ও ব্যাথা পাওয়াটাকে আলোকিত করেছে।

ক্যাকটাসটি সম্পর্কের গতানুগতিক জটিলতা ও ভুল বোঝাবুঝির নিদর্শন। তার কতগুলি হল ভালোবাসার ব্যাথা পাওয়ার দিক এবং সম্পর্কে প্রতারণা ও অহংকারের পরিণামের দুটোরই প্রতীক। ও হেনরি বিশেষত্ব - ব্যাঙ্গারতক সমাপ্তি আর মানব ব্যবহারের সুক্ষ বিশ্লেষণ, দুটোই পাওয়া যায় এই গল্পে। ত্রিশডেল নিজের আত্মাভিমানে তার প্রেমিকা জিজ্ঞাসা করে উঠতে পারল না, ওই গাছটার মানে। তার প্রেমিকাও তার নিরুত্তর মনোভাবকে তার প্রেমের প্রত্যাখান বলে ধরে নিয়েছে। এটা ক্যাকটাশটি কাটায় আঘাত পাওয়া মতই মর্মান্তিক পরিণতি। একটি প্রেমের ফুল প্রস্ফুটিত হবার আগেই ক্যাকটাশের ন্যায় কাটায় পরিপূর্ণ হয়ে গেল, অহংকার ও ভুল বোঝাবুঝি কারণে।

বাহ্যিক লিঙ্কগুলি

মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০২২

The Black Cat (সেই কালো বিড়াল) - Edgar Allan Poe (এডগার অ্যালান পো)

ভূমিকা

এডগার অ্যালান পো লিখিত 'দি ব্ল্যাক ক্যাট' গল্পটির মূল বিষয়টি একটি কালো বেড়ালকে ঘিরে কথকের বন্ধুত্ব ও আত্মীয়তা থেকে মাদকতার জন্য কথকের ক্রম-বর্তমান মানসিক ও দৈহিক অবনতি। গল্পটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৪৩-এর ১৯-শে আগস্ট 'দি স্যাটারদে ইভিনিং পোস্ট' ম্যাগাজিনে।

চরিত্র

  • গল্পের কথক
  • কথকের স্ত্রী
  • কালো বিড়াল

সারমর্ম

গল্পের কথক হলেন পো'য়ের গল্পের সেই চির পরিচিত একজন বেনামি অনির্ভরযোগ্য কথক, যিনি তার অতীতের পাপের কাহিনী আমাদের শোনাছেন যা তাকে আজও ভীত করে। কথক ছোটবেলা থেকেই পশুপাখি প্রেমী বলেই পরিচিত, তিনি হলেন সেই সমস্ত লোকদের মধ্যে পরেন যারা নম্রতা ও কোমলতার জন্য সমাজে উৎপীড়িত হন। তিনি ও তার স্ত্রী অনেক পালিত পশুপাখির মালিক, যার মধ্যে আমাদের গল্পের সেই কালো বিড়াল প্লুটোও পড়ে। বিড়াল ও তার মালিক মানে, এই গল্পের কথকের মধ্যে একটি স্বভাবত পারস্পরিক প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে কথেকের মাদ্যকতা তার মানসিক বিকার ঘটায় যার কারণে প্লুটোর পাশাপাশি তার বাকি পালিত জীবগুলো তাকে এড়িয়ে চলে। এই একমাত্র পরিবারের তার থেকে কিছুটা ভয় ও কিছুটা ঘৃণায় এড়িয়ে চলাটা, কথক ঠিক মেনে নিতে পারে না। তাই এক রাতে যখন মদ্যপ অবস্থায় কথক বাড়ি ফেরেন আর তার প্রিয় প্লুটো তাকে দেখে সেখান থেকে সরে পড়তে যায়, তখন তার এই বেড়ে ওটা কোপের শিকার হয় অবলা প্রাণীটা। কথক তার পেন-নাইফ দিয়ে প্রাণীটার একটা চোখ সারাজীবনের মত কানা করে দেয়, শুধু নিজেকে রক্ষা করবার জন্য তাকে কামড়ে ছিল বলে। কিন্তু তারপর যখন সকালে তার নেশার ঘোর কেটে যায়, তার নিজের উপর ঘৃণা ও ক্ষেদ হতে থাকে। আর এরপর থেকে বিড়ালটাও আরও ভয়ে ভয়ে দূরে থাকে। বিড়ালটার ক্ষিপ্র ভাবে খোবলানো চোখটা যেন কথকে তার পাপের কথা বার বার মনে করায়, কথকের এই ঘটনা মনে পড়লে কষ্ট হত কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তার বিরক্তির কারণ হয়ে উঠল। তাই আরেকটি রাত্রে মদ্যপ অবস্থায় বিকৃতমানসিকতার(perverseness) পরিচয় দিয়ে বিড়ালটার প্রাণ দণ্ডের জন্য, সেটাকে গলায় দড়ি দিয়ে বাগানের গাছে লটকে দেয়, যেখানে সেটা মারা যায়। সেই রাত্রেই অদ্ভুত ভাবে তার বাড়িতে আগুণ ধরে যায়, যেখানে তিনি, তার স্ত্রী ও তার একমাত্র পরিচারক সেখান থেকে পালিয়ে যান। কেমন যেন ঈশ্বরের ন্যায় একটু তাড়াতাড়ি বিচার দিল!

পরের দিন আগুনে দগ্ধ বাড়িতে ফিরে, কথক দেখেন আগুণ থেকে বেঁচে যাওয়া একটা দেওয়ালে একটি বিশাল বেড়ালের গলায় দড়ি লাগানো প্রতিচ্ছবি। যদিও প্রথমটা কথক ইতস্ত বোধ করছিলেন, পরে ভেবে দেখেন হয়তো মড়া বিড়ালটাকে কেউ জানলা দিয়ে বাগান থেকে ছুঁড়ে ফেলে, আর হয়তো বিড়াল আগুণের তাপে বেঁচে উঠে। এই পুরো ঘটনাটা তাকে আরও আর্থিক ও মানসিক ভাবে ভেঙ্গে দেয় কারণ বেড়ালটির সাথে সাথে তার বিশাল বাড়িটিও ক্ষতিগ্রস্ত। বিড়ালটাকে যখনি মনে পরে তখন তার কৃতকর্ম তাকে অনুতপ্ত করে। আবার একদিন মদের ঠেকে প্লুটোর মত দেখতে একটা বিড়ালকে দেখতে পান কথক, বিড়ালটা প্রথম দেখা থেকে তার খুব নেউটা হয়ে যায়। রঙ, আকৃতি সবই একইরকম হলেও এই বিড়ালটার বুকের কাছে একটা সাদা ছোপ ছিল। বিড়ালটাকে বাড়িতে নিয়ে গেলেন কথক। প্রথম কদিন তার প্লুটোর হারাবার কষ্ট কমালেও, কিছুদিন পর থেকে এই বিড়ালটাকে ভয় ও ঘৃণা করতে শুরু করল কারণ তার পাপের কথা মনে করিয়ে দেয় সে। আবার এই বিড়ালটারও একটা চোখ কানা আর তার বুকের কাছে সাদা ছোপটা ফাঁসির কড়িকাঠের চেহারা নিতে লাগল। এইসব বিষয় তাকে আরও ক্রুধ ও ভীত করতে থাকে। একদিন তাই নতুন বাড়িতে সেলারে সে ও তার স্ত্রী কিছু একটা দেখতে গেলে, বিড়ালটাও তাদের পিছু নেয়। সিঁড়ি দিয়ে নামবার সময় বিড়াল এমনভাবে পায়ের নীচ দিয়ে বেরিয়ে যায় যে আর একটু হলে কথক পড়ে যেতেন, এই ঘটনায় রেগে গিয়ে কথক একটা কুঠার নিয়ে তেড়ে যায় বিড়ালটাকে মারবার জন্য। তার স্ত্রী বাঁধা দিয়ে পথের সামনে দাঁড়ালে, কথক সেই কুঠার তার স্ত্রীর মাথায় বসিয়ে দিয়ে মেরে ফেলেন। মৃতদেহটা সেই সেলারের কাঁচা দেওয়াল ভেঙ্গে তার ভিতরে ঢুকিয়ে বালি সিমেন্ট দিয়ে সেঁটে দেন ঠিক আগের মত। তার স্ত্রীকে দেওয়াল বন্দি করবার পর সেই বিড়ালের কোন দেখা না পেয়ে কথক নিশ্চিন্ত হল। এবার তার শান্তির মাঝখানে কেউ আস্তে পারবে না। এই মারাত্মক পাপের জন্য দুঃখ বোধ হয়েছিল কিন্তু যখন সবাই তার স্ত্রীকে খুঁজেও না পেয়ে হাল ছেড়ে দিল, তখন কথকের কেমন যেন একটা স্বস্তির মুক্তির ঘুম হল। কিছুদিন পর পুলিস সন্ধানে এলে বাড়ি তন্য তন্য করে খুঁজেও যত কিছু পায়না ততই কথক কেমন উন্মত্ত প্রফুল্লতায় ভরে উঠেন। সব শেষে যখন সেলারে খুঁজেও কিছু পেল না পুলিস, তখন সেই উন্মত্ত প্রফুল্লতায় দেওয়াল ঠুকে ঠুকে বাড়ির দেওয়ালের প্রশংসা শুরু করেন তিনি। নিজের পাপ সফল ভাবে লুকাতে পারবার নিশ্চিন্তের আনন্দে যেই সেই দেওয়ালে ঠোকা মারে যেখানে তার স্ত্রীর দেহটা লুকানো ছিল, তখনি একটা তীব্র অমানবিক চিৎকার শোনা যায় দেওয়ালের ওপার থেকে। পুলিস কর্মীরা দেওয়াল ভেঙ্গে আবিষ্কার করে একটা পচনপ্রাপ্ত নারীর মৃতদেহ ও তার মাথার উপর বসে থাকা সেই কালো বেড়ালটা যেটা এখনও চেঁচিয়ে যাচ্ছে। আতঙ্কিত কথক তার অপরাধের আবিষ্কার হতে দেখে ও কালো বিড়ালটির অলৌকিক প্রত্যাবর্তন হতে দেখে, দীর্ঘনিশ্বাস ফেলতে ফেলতে বলেন যে, "আমি এই শয়তানকে সমাধিতে দেওয়ালে বন্দি করেছিলাম!"

থিম এবং বিশ্লেষণ

এই গল্পটার কথকের মানসিক সাম্যবস্থার উপরে আমাদের শুরু থেকেই সন্দেহ হয়। একদিকে নিজেকে কথক চরম পশুপাখি প্রেমী বলছেন, অন্যদিকে তার বিড়ালের উপর চরম আঘাত হানছেন। তার স্ত্রী তার পশুপাখি প্রেমে অংশ নেয়, তাই হয়তো তার স্ত্রীকে তার পালিতা বলেই মনে করেতেন। তার অত্যাধিক পশুপ্রেম এই মানসিক বিকারের কারণ। এই গল্পে পো 'মাদকতা'-কে একটি অসুখ বা দানব বলে আখ্যান দেন এবং এই গল্পে তার তীব্র বর্জনের বার্তাও দেন। গল্পে 'কালো বেড়াল'-এর ব্যবহার কুসংস্কারের জন্য করা হয়েছে, এবং এক জায়গা এটাও বলা হয় ডাইনিরা নাকি কালো বেড়ালের রূপে ঘুরে বেড়ায়। আবার বেড়ালটির নামও রোমান পুরাণের পাতালের দেবতা প্লুটোর নামে। স্কটিশ ও আইরিশ পুরাণ মতে ক্যাঁত-সিথের ও বুকে সাদা ছোপ ছিল। এদিকে পোয়েরও একটি কালো বেড়াল ছিল। কালো বেড়ালটি পুরো গল্পে একটি নিরপেক্ষ চরিত্রে অংশ গ্রহণ করেছে। কথক তার মাদকতার কারণে চরম শাস্তির শিকার হয়েছে বিড়ালটি যদি তার নামে ও রঙে একটি অশুভ ভাব আছে, কিন্তু বিড়ালটিই ছিল কথেকের চরম অবনতির সাক্ষী, ঠিক ডাইনিদের মত। প্লুটোর একটি চোখের অন্ধ হওয়া কথেকের আপেক্ষিক নৈতিক অন্ধ হওয়াকে বোঝায়। কথকের বাড়ির পুরে ছাই হয়ে যাওয়া তার সম্পূর্ণ নৈতিক অবনতির চিহ্ন, আর সেই প্লুটোর দেওয়ালে ছাপটি ছিল অমার্জনীয় ও গর্হিত অপরাধের চিহ্ন। পো এখানে diazeugma এর ব্যবহার করেছেন, গল্পের বিবরণ সংক্ষিপ্ত ও দ্রুত রাখবার জন্য।

বাহ্যিক লিঙ্কগুলি